কসর নামাজের নিয়ম - কসর নামাজের বাংলা নিয়ত
মানুষ যখন সফরে যায় তখন কসর নামাজ পড়া হয়। কসর নামাজের নিয়ম ও ফজরের কসর নামাজের নিয়ম আমাদের সবার জেনে থাকা উচিত কারণ সবারই কখন না কখন সফর করতে হয়। কসর নামাজের নিয়ম বা কসর নামাজের মাসআলা যদি জানতে চান তাহলে পোস্টটি পড়ুন। কসর নামাজের নিয়ম এবং কসর নামাজের সুন্নত নিয়ে সকল তথ্য আজ জানাবো।
এই নিবন্ধে আমরা সেই বিষয়টি আপনাদের জানাবো যা অনেক মুসলমানকে কসর সালাত বা ভ্রমণের সময় নামাজ নিয়ে। আপনাদের মনে প্রায়ই প্রশ্ন আসে সফরের বা কসরের নামাজ সম্পর্কে। আজ আমরা আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে কসর নামাজের নিয়ম বা মাগরিবের কসর নামাজের নিয়ম সম্পর্কে সব জানাবো।
সূচিপত্রঃ কসর নামাজের নিয়ম
কেন আমরা ভ্রমণের সময় কসর নামাজ পড়বো
সফরের সময় নামাজ সংক্ষিপ্ত করার কথা কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে এবং এটি নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর একটি নিশ্চিত সুন্নত হিসেবে ধরা হয়। যখন আপনি সারা দেশে ভ্রমণ করবেন বা সফর করবেন তখন কসর বা সংক্ষিপ্ত নামাজের জন্য আপনার কোনো পাপ হবেনা। কিন্তু কসর নামাজের নিয়ম ও কসর নামাজের মাসআলা ভালোভাবে জানতে হবে।
তাই শুধু মুসাফিরদের জন্য ৪ রাকাতের নামাজ গুলোকে সংক্ষিপ্ত করে শুধুমাত্র ২ রাকাত অর্থাৎ শুধুমাত্র যোহর, আছর ও এশার নামাজের শুধু ফরজ নামাজ আদায় করা জায়েয আছে। আর এটাই হল কসর নামাজের নিয়ম বা কসর নামাজের সুন্নত।
কসর নামাজের শর্ত
কসর নামাজের দূরত্ব বা ভ্রমণ দূরত্বঃ ইমাম আবু হানিফার মতে একজন ব্যক্তিকে সফকারী হিসাবে তখনই ধরা যাবে যখন তার ভ্রমণের দূরত্ব সে যেখান থেকে সফর শুরু করে সেখান থেকে থেকে ৪৮ মাইল বা প্রায় ৮০ কিলোমিটার হতে হবে। আবার ইমাম শাফিঈ, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল এবং ইমাম মালিক এই দূরত্ব নির্ধারণ করেছেন প্রায় ৫৫ মাইল বা প্রায় 88 কিমি।
আরো পড়ুনঃ শবে বরাতের নামাজের নিয়ম - শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়
যখন একজন ব্যক্তি তার শহরের সীমানার ৪৮ মাইল বা প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে চলে যায় তখন নামাজ সংক্ষিপ্ত করা শুরু হয় এবং যখন তারা পুনরায় তাদের শহরে চলে আসে তখন কসর নামাজ বন্ধ হয়ে যায়। তাহলে কসর নামাজের দূরত্ব হল নিজ শহরের সীমানা থেকে ৪৮ মাইল বা প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে।
কসর নামাজের সময়কাল
কসর নামাজের সময়কাল বলতে আপনি কতদিন ধরে সফরে থাকলেও এই নামাজ পড়তে পারবেন। এই নামাজের একটা সময়কাল আছে। আপনি যদি সারাজীবন সফরে থাকেন তাহলে সারাজীবন তো আর এভাবে নামাজ পড়তে পারবেন না। কারণ আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। তাই সারাজীবন আমরা তা সংক্ষিপ্ত করে আদায় করতে পারিনা।
আরো পড়ুনঃ শবে মেরাজের নামাজের নিয়ম - শবে মেরাজের নামাজের নিয়ত
- ৩ দিন থেকে ৪ দিন এবং ১৫ দিন পর্যন্ত এই বিষয়ে আলেমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
- এখানে একটা হাদিস থেকে জানা যায় কসর নামাজ 15 দিনের কম পড়া যেতে পারে [হানাফী হাদিস মতে]
- আর একটা হাদিস মতে ৪ দিনের ও কম সময় কসর নামাজ পড়া যাবে [হাম্বলি, মালিকি এবং শাফি হাদিস মতে]
কসর নামাজের নিয়ম
আমরা এতক্ষণ কসর নামাজ সম্পর্কে তো জানলা এবং শুনলাম। এখন আমরা কসর নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানব।
- সফরের সময় শুধুমাত্র ৪ রাকাত ফরজ নামাজ সংক্ষিপ্ত করা যায় একেই কসর নামাজ বলে। অর্থাৎ যোহর, আসর ও এশা নামাজের ৪ রাকাত ফরজ নামাজের পরিবর্তে ২ রাকাত নামাজ পড়তে হবে।
- যাইহোক ফজরের কসর নামাজের নিয়ম বা ফজরের ওয়াক্তে ২ রাকাত ফরজ এবং মাগরিবের কসর নামাজের নিয়ম বা মাগরিবের ওয়াক্তে ৩ রাকাত পূর্ণ ফরজ নামাজ পড়তে হবে কারণ আপনি ২ বা ৩ রাকাত ফরজ নামাজ অর্ধেক করতে পারবেন না।
- সফরে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ফজরের নামাজের ২ রাকাত সুন্নত এবং এশার নামাজের সাথে ৩ রাকাত বিতর পড়তেন। তাই আপনাদের ও সফরের সময় এ দুটি নামাজ ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়।
মনে রাখবেন যে এই নিয়মগুলি কেবলমাত্র সেই ব্যক্তির জন্য যিনি ভ্রমণ করছেন। তবে কোনো মুসাফির যদি জামাতে নামাজ পড়ে তবে তাকে অবশ্যই ইমামকে অনুসরণ করতে হবে এবং পূর্ণ নামাজ আদায় করতে হবে। কসর নামাজের জন্য এই নিয়ম গুলো খুব প্রয়োজন। আর নিয়তের কথা বলেন তাহলে কসর নামাজের বাংলা নিয়ত ও করতে পারেন তাতে কোনো সমস্যা নাই।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url