মুসাফির কাকে বলে - মুসাফির এর নামাজের নিয়ম

আমরা অনেকেই মুসাফির কাকে বলে? এই প্রশ্নের উত্তর জানিনা। আপনি যদি মুসাফির কাকে বলে? জানতে চান তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন। এই আর্টিকেলে আমরা মুসাফির শব্দটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং মুসাফির কাকে বলে? সে সম্পর্কে আপনাদের ধারণা দেব।

আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে মুসাফির কাকে বলে? বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মুসাফির কাকে বলে? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ মুসাফির কাকে বলে - মুসাফির এর নামাজের নিয়ম

মুসাফির কাকে বলে - মুসাফির এর নামাজের নিয়মঃ ভূমিকা

আমরা যারা ইসলাম ধর্মাবলম্বীর মানুষ রয়েছে সাধারণত তারা মুসাফির শব্দটির সাথে অনেক পরিচিত। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ মানুষ মুসাফির কাকে বলে? এ বিষয়টি সম্পর্কে জানিনা। আপনাদের জানার সুবিধার্থে আজকের এই আর্টিকেলে মুসাফির কাকে বলে? এছাড়া মুসাফির নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আরো পড়ুনঃ রমজানের প্রথম ১০ দিনের আমল - রমজানের প্রথম দশ দিনের দোয়া

আরো থাকবে মুসাফির এর নামাজের নিয়ম, মুকিম কাকে বলে? মুসাফির হওয়ার শর্ত, মুসাফির কত দিন? মুসাফির কি সুন্নাত পড়বে? এ বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি আপনি মুসাফির সম্পর্কে সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

মুসাফির কাকে বলে?

বিশেষ কোনো কাজে অথবা প্রয়োজনে প্রমদভ্রমণের জন্য মানুষ নিজের এলাকা ও বাড়ি থেকে বের হয়। অনেক দূরে চলে যায়। কোন ব্যক্তির এমন কোন উদ্দেশে নিজ বাড়ি থেকে ভ্রমণ বা সফর করে বের হওয়ার পর কমপক্ষে ৪৮ মাইল যা প্রায় ৭৮ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে শরীয়তের ভাষায় মুসাফির বলা হয়।

মুসাফির ব্যক্তির জন্য ইসলামের বেশ কিছু বিধান পালন সহজ করা হয়েছে। যেমন মুসাফির ব্যক্তির জন্য নামাজ বছরের বিধান দেওয়া হয়েছে এবং শহরকারীর সময় রোজা না রেখে পরে রোজা রেখে নেওয়ার বিধানও রয়েছে। আশা করি মুসাফির কাকে বলে? বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

মুসাফির এর নামাজের নিয়ম

আমরা অনেকেই মুসাফির এর নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানিনা। কিন্তু মুসাফিরের জন্য নামাজের বিধান অন্য রকম রয়েছে। আল্লাহ পাক কুরআনে বলেন, "তোমরা যখন যমীনে সফর কর এবং তোমাদের আশঙ্কা হয় যে, কাফিরগণ তোমাদেরকে বিপন্ন করবে, তখন সালাত কছর করলে তাতে তোমাদের কোনও গুনাহ নেই। নিশ্চয়ই কাফিরগণ তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন।"

অনেক হাদীসে এসেছে, হযরত মুহাম্মদ সাঃ হজ্জ, ওমরা, যুদ্ধসহ যে কোন সফরে কছরের নামায পড়তেন। ইবনে ওমর থেকে বর্ণিত, 'আমি মুহাম্মাদ সাঃ এর সাথে ছিলাম, তিনি সফরে (চার রাকাআত বিশিষ্ট নামায) দুই রাকাআতের বেশি পড়তেন না। আবুবকর ও ওমর একই রকম নামায পড়তেন।'{বুখারী ও মুসলিম}

মুসাফির ব্যক্তি পথিমধ্যে চার রাকাআত বিশিষ্ট ফরয নামায অর্থাৎ জোহর, আসর ও ঈশার ফরয নামায কে দুই রাকআত পড়বে। এই নামাজকে কসরের নামায বলে। তিন রাকআত বা দুই রাকাআত বিশিষ্ট ফরয নামায, ওয়াজিব নামায এমনিভাবে সুন্নাত নামায পূর্ণ পড়তে হবে। এ হলো পথিমধ্যে থাকাকালীন সময়ের বিধান।

আর গন্তব্য পৌঁছার পর যদি সেখানে ১৫ দিন বা তদুর্ধকাল থাকার নিয়ত হয় তাহলে কছর হবে না- নামায পূর্ণ পড়তে হবে। আর যদি ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত থাকে তাহলে কছর হবে। গন্তব্যস্থান নিজের বাড়ি হলে কছর হবে না, চাই যে কয় দিনই থাকার নিয়ত করুক। মুসাফিরের জন্য নামায সংক্ষিপ্ত করে পড়া আল্লাহর পক্ষ থেকে তার প্রিয় বান্দাদের জন্য উপহার স্বরূপ। তাই মুসাফিরের জন্য ওয়াজিব হলো সেই উপহার গ্রহণ করা।

মুকিম কাকে বলে

মুসাফির আমরা অনেকেই জানি কিন্তু মুকিম কাকে বলে? এ বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা থাকে না। মুসাফির হয় যখন কোন ব্যক্তি তা নিয়ে এলাকা ছেড়ে ৭৮ কিলোমিটারের বাইরে কোন এলাকায় যায়। কিন্তু যে ব্যক্তি নিজ এলাকায় অবস্থান করছে বা নিজ এলাকার ৭৮ কিলোমিটারের কম দূরত্ব সফর করছে তাকে শরীয়তের পরিভাষায় মুকিম বলা হয়।

আরো পড়ুনঃ রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ৮ টি ইবাদাত - রোজার ইবাদতের ফজিলত 

কোন ব্যক্তি যদি কোন গ্রাম বা এক শহরে ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি সময় অবস্থান এর নিয়ত করে তাহলে ওই স্থানে সে ব্যক্তিকে মুকিম বলা হবে। কোন ব্যক্তি সফরসম দূরত্বের উদ্দেশ্যে গ্রামের বাসিন্দা নিজ গ্রামের সীমানা ত্যাগ করার পর এবং শহরের বাসিন্দা শহরের সীমানা ত্যাগ করার পর থেকে শুরু করবে। আর সফর থেকে ফেরার পথে নিজ গ্রাম শহরের সীমানায় প্রবেশ করার পর মুকিম হয়ে যাবে।

মুসাফির হওয়ার শর্ত - মুসাফির কত দিন

এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ভ্রমণকারীকে মুসাফির বলা হয়। মুসাফির হওয়ার শর্ত রয়েছে। মুসাফির কত দিন থাকে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে অবশ্যই একজনের মুসাফির হওয়ার আগে জেনে নেওয়া উচিত। যদি কোন ব্যক্তি মোটামুটি ৪৮ মাইল অর্থাৎ ৭৭.২৩২ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে কোন স্থানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ এলাকার লোকালয় থেকে বের হয়, তাকে ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় মুসাফির বলা হয়।

মুসাফির ব্যক্তির গন্তব্য স্থানের মাসআলা উপর্যুক্ত নিয়ম অনুযায়ী হবে। ১৫দিন বা তার বেশি থাকার নিয়ত হয়নি এবং পূর্বেই চলে যাবে চলে যাবে করেও যাওয়া হচ্ছে না এভাবে ১৫দিন বা তার বেশি থাকা হলেও কছর পড়তে হবে।

মুসাফির কি সুন্নাত পড়বে

মুসাফির কি সুন্নাত পড়বে? এ ধরনের প্রশ্ন অনেকেই করে থাকে। একজন মুসলিম হিসেবে এবং মুসাফির হতে চাইলে আমাদেরকে অবশ্যই মুসাফির কি সুন্নত পড়বে বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত।

মুসাফির ব্যক্তির জন্য চলন্ত অবস্থায় বা তাড়াহুড়া থাকলে ফজরের সুন্নত ছাড়া অন্যান্য সুন্নাতে মুয়াক্কাদা না পড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে স্বাভাবিক ও স্থির অবস্থায় সুন্নত নামাজ আদায় করবে। {ইলাউস্ সুনানঃ ৭/১৯১, রদ্দুল মুহতারঃ ১/৭৪২}

মূলত সফর অবস্থায় তাড়াহুড়া ও ব্যস্ততার সময় সুন্নত না পড়ার অবকাশ আছে। আর গন্তব্যে পৌঁছার পর সুন্নত নামাজ পড়া উত্তম। সুন্নত পড়লে পুরোটাই পড়বে। কেননা সুন্নত নামাজের কসর হয় না।

মুসাফির কাকে বলে - মুসাফির এর নামাজের নিয়মঃ উপসংহার

মুসাফির এর নামাজের নিয়ম, মুকিম কাকে বলে? মুসাফির হওয়ার শর্ত, মুসাফির কত দিন? মুসাফির কি সুন্নাত পড়বে? মুসাফির কাকে বলে? এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি আজকের এই আর্টিকেল থেকে মুসাফির সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আপনাদের বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত।

আরো পড়ুনঃ মসজিদে প্রবেশের দোয়া ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া

আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে সেই পর্যন্ত আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ। ২০৮৭৬

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url