বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায়

যদি আপনার বাচ্চার কাশি হয় তাহলে বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নিন। কারণ অনেক সময় বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগার কারণে সর্দি কাশি লেগে থাকে এ অবস্থায় যদি বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায় জানা থাকে তাহলে খুব সহজেই বাচ্চাদের কাশি থামানো সম্ভব। আজকের এই আর্টিকেলে বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায় আলোচনা করা হলো।

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায়

বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায় - কিভাবে বাচ্চার কাশি কমানো যায়

বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক কম থাকায় অল্পতেই বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগার মত সমস্যা বেশি দেখা যায় বিশেষ করে সর্দি কাশি। ছোট বাচ্চাদের সর্দি-কাশির সমস্যা যেন লেগেই থাকে। শুধু ঠান্ডা লাগার কারণেই কাশির সমস্যা হয় এমনটা নয় বেশ কিছু কারণে শিশুদের কাশি হতে পারে। সাধারণত বাচ্চাদের কাশি কমানোর জন্য কিভাবে বাচ্চার কাশি কমানো যায়? এ বিষয়ে অবশ্য ধারণা থাকতে হবে।

আরো পড়ুনঃ শিশুর জ্বর কমানোর ১০ টি ঘরোয়া উপায়

যদি আপনার বাচ্চার কখনো কাশি হয় তাহলে কিভাবে বাচ্চার কাশি কমানো যায়? জানা থাকলে আপনি খুব সহজেই কাশি থামাতে পারবেন। সেই লক্ষ্যে বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায়ঃ

  • লেবু ও মধু খাওয়ানো
  • আদা ও মধু খাওয়ানো
  • হলুদ ও মধু খাওয়ানো
  • দুধ এবং হলুদ
  • গরম পানি দিয়ে গার্গল করা
  • সরিষার তেল এবং রসুন
  • মিছরি খাওয়ানো
  • গরম সুপ
  • তুলসির পাতা খাওয়া
  • চিকিৎসা ব্যবস্থা করা

লেবু ও মধু খাওয়ানো - আমরা জানি যে লেবুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি এবং মধুর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকমের রোগ দূর করতে সাহায্য করে। লেবু পানিতে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে বাচ্চাকে খাওয়ান। মধু শ্বাস যন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং বুক থেকে কফ দূর করতে সাহায্য করে।

আদা ও মধু খাওয়ানো - আদার সাথে যদি মধু খাওয়া যায় তাহলে এটি আমাদের কাশি কমাতে বেশ কার্যকরী। বিশেষ করে সর্দি কাশি থেকে মুক্তি দিতে আধা এবং মধু ঘরোয়া পদ্ধতি। বাচ্চাকে এক টুকরো আদার সাথে মধু মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। এক বছরের কম বয়সে বাচ্চাদের মধু দেওয়া উচিত নয়।

হলুদ ও মধু খাওয়ানো - যদি বাচ্চাদের কাশি হয় এবং এই কাশি কমাতে চান ঘরোয়া পদ্ধতিতে তাহলে হলুদ এবং মধু খাওয়াতে পারেন। মধুর অনেক গুনাগুন রয়েছে এর মধ্যে একটি হল মধু গলা ভালো রাখতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে এক বছরের বেশি বাচ্চাদের হলুদের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে দিন।

দুধ এবং হলুদ - হলুদের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। বাচ্চার কাশি কমানোর জন্য হলুদ দুধ ব্যবহার করতে পারেন। এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে আধা চামচ হলুদ মিশিয়ে বাচ্চাকে খেতে দেন এতে করে কাশি অনেকটা আরাম হবে আগের তুলনায়।

গরম পানি দিয়ে গার্গল করা - সাধারণত গলায় বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকার কারণে কাশি হয়ে থাকে। কাশি কমানোর জন্য গরম পানির গার্গল করতে পারেন। আমাদের গলা ব্যথা এবং কাশি থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সবথেকে কার্যকরী উপায় হল গরম পানি দিয়ে গার্গল করা।

সরিষার তেল এবং রসুন - বাচ্চাদের কাশি কমানোর জন্য সরিষার তেল এবং রসুন অনেক কার্যকরী। সরিষার তেল গরম করে এর মধ্যে সামান্য রসুন খেলে হালকা কিছুক্ষণ গরম করে এরপর শিশুর গলা বুক পিঠ হাতের তালু এবং পায়ের পাতার মালিশ করলে ঠান্ডা কাশি দূর হতে কার্যকরী হবে।

মিছরি খাওয়ানো - বাচ্চাদের কাশি থেকে মুক্তি দিতে পারে মিছরি। এটি খুবই সহজলভ্য। মিছরি গলার আদ্রতা বজায় রাখে এবং গলার জ্বালা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই বাচ্চাদের কাশি কমানোর জন্য মিছরি খাওয়াতে পারেন।

গরম সুপ - বাচ্চাদের কাশি কমানোর জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হল গরম সুপ। গরম সব বাচ্চাদের কাশি কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। গরম সুপ খাওয়ালে কাশি কমবে এর সাথে সাথে গলা ব্যথা ও অনেকটা আরাম হবে।

তুলসির পাতা খাওয়া - তুলসির পাতা কাশি কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে এটা আমরা সকলেই জানি। বাচ্চাদের যদি অতিরিক্ত কাশি হয় তাহলে এই কাশি কমানোর ক্ষেত্রে তুলসির পাতা বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।

চিকিৎসা ব্যবস্থা করা - যদি উপরের পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করে কাশি না কমে তাহলে অবশ্যই দেরী না করে বাচ্চার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে।

প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চার কাশি কমান

বাচ্চাদের যদি কাশি হয় তাহলে এটা শুধু ঠান্ডা লাগার কারণে হয়েছে এমনটা নয় আরো বিভিন্ন রকম কারণে বাচ্চাদের কাশি হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ করলেও কাশি হয়ে থাকে। আপনি যদি এই কাশি কমাতে চান তাহলে প্রথমে ওষুধ না খেয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চার কাশি কমান। আপনার বাচ্চার কাশি কমানোর জন্য উপায়গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।

প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চার কাশি কমানঃ

১। শিশুদের কাছে কমানোর জন্য খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে মধু। আপনি যদি শিশুদের কাশি প্রাকৃতিকভাবে কমাতে চান তাহলে মধু হালকা গরম করে সেটি খাওয়াতে পারেন।

২। শিশুদের কাশি হলে এ কাশি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে মিছরি। যেহেতু একটি মিষ্টি তাই মিছরি শিশুদের মুখে দিয়ে চুষতে বলুন।

৩। খুসখুসে কাশি হলে বাচ্চাকে জিংক লজেন্স কয়েক ঘন্টা পর পর দিতে থাকুন। এটি খেলে কাশি অনেকটাই কম হয়ে যাবে।

৪। প্রথমে আদা অল্প করে বেটে নিন এরপরে এর সঙ্গে মধু মিশন। আদার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বিশেষ করে এলার্জির অন্যতম চিকিৎসা এটি। দীর্ঘস্থায়ী কাশি নিরাময় করতে আধা এবং মধু খাওয়াতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের খিচুনি হওয়ার ৫ টি লক্ষণ - খিচুনি হওয়ার নয়টি লক্ষণ

৫। কাশি কমানোর জন্য প্রাকৃতিক ভাবে এক বাটি সবজির সুপ তৈরি করে দিতে পারেন। গরম সুপ খেলে বাচ্চার কাশি এবং গলা ব্যথা দুটোই ভালো হয়ে যাবে।

৬। কাশি কমানোর জন্য আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক উপায় হলো সরিষার তেল গরম করে এর মধ্যে রসুন বাটা দিয়ে শিশুদের গলায় এবং বুকে লাগিয়ে দেওয়া।

৭। যদি শিশুর অনেক কাশি হয় তাহলে কাশি কমানোর জন্য মধুর সঙ্গে সামান্য পরিমাণ গোলমরিচ গুঁড়া খাওয়াতে পারেন। এগুলো বাচ্চার কাশি কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।

৮। বিশেষ করে যদি রাতে বাচ্চাদের কাশি বেশি হয় তাহলে কয়েকটি বালিশ দিয়ে তাদের মাথা উঁচু করে রাখবেন। এভাবে শুইয়ে দিলে কাশি অনেকটা কম হবে।

বাচ্চার কাশি হলে কি করবেন

আপনার বাচ্চার কাশি হলে কি করবেন? এ বিষয়টি নিয়ে খুবই চিন্তিত রয়েছেন চিন্তার কোন কারণ নেই। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আপনি ইতিমধ্যে বাচ্চার কাশি হলে কি করবেন? সে বিষয়ে জানতে পেরেছেন।

বাচ্চাদের কাশি শুধু ঠান্ডা জনিত সমস্যার কারণে হয় না বিভিন্ন কারণ রয়েছে কাশি হওয়ার। সাধারণত বাচ্চাদের যে কারণে কাশি হোক যদি আপনি উপরের পদ্ধতিগুলো তাদের করাতে পারেন তাহলে খুব সহজেই তাদের কাশি দূর হয়ে যাবে। কারণ কাশি কমানোর জন্য এই পদ্ধতি গুলো খুবই কার্যকরী।

বিশেষ করে মধু আদা এবং তুলসী কাশি কমানোর জন্য অনেক উপকারী। আমরা কম বেশি সকলেই এই উপাদানগুলোর উপকারিতা সম্পর্কে জানি। এছাড়া সরিষার তেল গরম করে এর সাথে আদা মিশিয়ে যদি বাচ্চাদের বুকে গলায় দেওয়া যায় তাহলে কাশি অনেকটা আরাম হয়। এছাড়া আরো কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে।

শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকার

শিশুদের সাধারণত ঠান্ডা জনিত সমস্যা লেগেই থাকে। কারণ ভুমিষ্ট হওয়ার পরে সাধারণত তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম থাকে তাই অল্প একটুতেই বাচ্চাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা দেখা যায়। শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকার জেনে রাখা একজন পিতা মাতার জন্য অত্যন্ত জরুরী। শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকার নিচে উল্লেখ করা হলো।

  • গরম পোশাক পরানো
  • পুষ্টিকর খাবার
  • সময় মতো টিকা দেওয়া
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা
  • ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়া

গরম পোশাক পড়ানো - সঠিকভাবে পোশাক পড়ে না থাকার কারণে অনেক সময় শিশুদের ঠান্ডা লাগার মত সমস্যা দেখা যায়। তাই সন্তানকে বিশেষ করে শীতের সময় মোটা কাপড় পরিয়ে রাখতে হবে ঠান্ডা জনিত সমস্যা থেকে নিজের মুক্ত হওয়ার জন্য।

পুষ্টিকর খাবার - শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার খাবারগুলো খাওয়াতে হবে। যদিও শিশুরা অনেক সময় বিভিন্ন রকমের পুষ্টিকর খাবার খেতে চায়না কিন্তু তাদেরকে খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

সময়মতো টিকা দেওয়া - শিশুকে সংক্রমণ প্রতিরোধের টিকা দিতে হবে। যেন শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং কোন ধরনের রোগ থাকে সংক্রমণ করতে না পারে।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা - অনেক সময় আমাদের সন্তানকে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু সংক্রমণ করার কারণে ঠান্ডা জনিত সমস্যার সর্দি কাশি লেগে থাকে। তাই সন্তানকে শিক্ষা দিতে হবে বাইরে থেকে এসে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। বাইরে থেকে আসার পরে মুখে অথবা চোখে হাত না দেওয়া।

ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়া - শিশুকে সুস্থ রাখার জন্য মায়ের বুকের দুধ সহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার চালিয়ে যেতে হবে। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়াতে হবে।

আমাদের শেষ কথাঃ বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায়

প্রিয় পাঠক গণ আজকের এই আর্টিকেলে শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকার, বাচ্চার কাশি হলে কি করবেন? প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চার কাশি কমান, কিভাবে বাচ্চার কাশি কমানো যায়? বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

আরো পড়ুনঃ শিশুদের জ্বর হলে করণীয় - শিশুর জ্বর কমানোর ২০ উপায়

আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি বাচ্চাদের কাশি সারানোর ১০টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আর কোন সমস্যা থাকার কথা নয়। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।২০৭৯১

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url