এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয়

এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয়? আমরা অনেকেই এই বিষয়টি জানিনা। কিন্তু এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা খুবই মারাত্মক। তাই এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয়? এ বিষয় সম্পর্কে জেনে যদি এই রোগে কখনো আক্রান্ত হয় তাহলে অতি তাড়াতাড়ি চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হয়। আজকের এই আর্টিকেলে এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয়? সেই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

আপনি যদি এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয়? জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন দেরি না করে এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয়? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয়

এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয় - এপেন্ডিসাইটিস কোন পাশে হয়

এপেন্ডিসাইটিস এ রোগ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি। অনেক সময় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক মারাত্মক কারণ হয়ে দাঁড়ায় এটি। তাই আমাদেরকে প্রথমে এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয়? এ বিষয় সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। এছাড়া আমরা যদি এপেন্ডিসাইটিস কোন পাশে হয়? তাহলে খুব সহজেই এ রোগের চিকিৎসা করে নিতে পারব।

আরো পড়ুনঃ সকালে ব্যায়াম করার ১০টি উপকারিতা - সকালে ব্যায়াম করার দশটি নিয়ম

এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা সাধারণত নাভির চারপাশে বা নাভির একটু উপরে থেকে শুরু হয়ে থাকে। কয়েক ঘন্টা পর তলপেটে ডান দিকের অংশে ব্যথাটা স্থায়ী হয়ে যায়। অনেক সময় প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা করতে পারে আবার অনেক সময় হালকা ব্যথা করতে পারে। এই ব্যথা থেমে থেমে উঠতে পারে।

এপেন্ডিসাইটিস রোগের সময় বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ এবং শারীরিক সমস্যা দেখা যায় এর মধ্যে অন্যতম হলো বমি বমি ভাব হওয়া অথবা মাঝেমধ্যে বমি হওয়া। এর সাথে সাথে শরীরের জ্বর থাকা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।

ব্যথা একসময় অসহ্য পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে। তাহলে আমরা জানতে পারলাম যে এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা নাভীর চারপাশ থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে তলপেটে ডান দিকে স্থায়ী হয়ে যায়। আশা করি এপেন্ডিসাইটিস কোন পাশে হয়? বিষয়টি সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন যদি তলপেটের। ডান পাশে প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা হয় তাহলে অবশ্যই দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থা করুন।

এপেন্ডিসাইটিস হওয়ার কারণ কি - এপেন্ডিসাইটিস কেন হয়?

এপেন্ডিসাইটিস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদেরকে এপেন্ডিসাইটিস হওয়ার কারণ কি? এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নিতে হবে। আমরা যদি এপেন্ডিসাইটিস কেন হয়? তা জানতে পারি তাহলে খুব সহজেই এ মারাত্মক রোগ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারব এবং খুব তাড়াতাড়ি চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে পারবো। এপেন্ডিসাইটিস হওয়ার কারণ কি? জেনে নেওয়া যাক।

এপেন্ডিসাইটিস কারণ - ১ঃ বৃহদান্ত্র এবং ক্ষুদ্রান্তের সংযোগস্থলে বৃহদান্ত্র এর সঙ্গে যুক্ত একটি ছোট থলের মত অঙ্গ থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় অ্যাপেন্ডিক্স বলা হয়। আমাদের দেহে এই অংশের তেমন কোন কাজ নেই বললেই চলে। তবে বিশ্বের প্রায় ৫% মানুষের ক্ষেত্রে এ অঙ্গটি প্রাণঘাতী। এই অঙ্গটি সমস্যা হলে সাধারণত রোগ হয় তাকে এপেন্ডিসাইটিস বলা হয়।

এপেন্ডিসাইটিস কারণ - ২ঃ কোন কারণে যদি অ্যাপেন্ডিক্স খাদ্য বা ময়লার ঢুকে যায় তাহলে সেখানে রক্ত পুষ্টি অভাব দেখা দেয়। যার ফলে সেখানে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু আক্রমণ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে এপেন্ডিক্স এ ব্যথা হতে শুরু করে। এই ব্যথা ধীরে ধীরে তলপেটের ডান দিকে চলে আসে এবং একসময় এপেন্ডিসাইটিস রোগ হয়ে যায়।

এপেন্ডিসাইটিস কারণ - ৩ঃ এপেন্ডিসাইটিস রোগের একমাত্র প্রধান কারণ হলো অ্যাপেন্ডিক্স থলির বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ। সাধারণত মলের ভর, শরীরে কোন বহিরাগত বস্তুর উপস্থিতি, পোকা রসিকা কণার বৃদ্ধি সংক্রমণ, আঘাত এবং টিউমারের কারণে অ্যাপেন্ডিক্স বাধার সৃষ্টি হতে পারে যার ফলে এপেন্ডিসাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং হয়ে থাকে।

এপেন্ডিসাইটিস কারণ - ৪ঃ ফিতা কৃমি এবং চ্যাপ্টা কৃমির মত পরজীবীরা এপেনডিক্সের ব্লকেজ তৈরি করতে পারে। পেটে বন্দুকের গলির মত আঘাত এবং কপারের মত মহিলাদের গর্ভ নির্ধারণ যন্ত্র ভুল জায়গায় স্থাপন করলে এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। আশা করি এপেন্ডিসাইটিস কেন হয়? এর কারণ সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন।

এপেন্ডিসাইটিস হলে বোঝার উপায় - কিভাবে বুঝবেন আপনার এপেন্ডিসাইটিস হয়েছে

আমরা যদি এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয়? জেনে নিতে পারি তাহলে খুব সহজেই এপেন্ডিসাইটিস হলে বোঝার উপায় গুলো জানতে পারবো। আপনার যদি এই রোগ হয় তাহলে আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার এপেন্ডিসাইটিস হয়েছে। তার জন্য এপেন্ডিসাইটিস হলে বোঝার উপায় রয়েছে। এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই সেগুলো জানা উচিত।

কিভাবে বুঝবেন আপনার এপেন্ডিসাইটিস হয়েছে তা জেনে নিনঃ

  • প্রচন্ড পরিমাণে তলপেটে ব্যথা হওয়া।
  • প্রথমে নাভির চারপাশে ব্যথা হয় এরপরে সেই ব্যথা তলপেটের ডান দিকে চলে যাওয়া।
  • অনেক সময় বমি বমি ভাব অথবা মাঝেমধ্যে বমি হওয়া।
  • যদি অ্যাপেন্ডিক্স কোন কারনে ফেটে যায় তাহলে সম্পূর্ণ পেট জুড়ে প্রচণ্ড পরিমাণে ব্যথা অনুভব করা।
  • এপেন্ডিসাইটিস রোগের আরও একটি প্রধান কারণ হলো কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া হওয়া।
  • বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে ক্ষুধা মন্দা দেখা দেওয়া।
  • অনেক সময় এপেন্ডিসাইটিস হলে জ্বর থাকতে পারে কিন্তু শরীরের তাপমাত্রা বেশি হয় না।

আরো পড়ুনঃ টিউমার ভালো করার ৯ টি উপায়

আপনার যদি এই লক্ষণ গুলো কখনো প্রকাশ পায় তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার এপেন্ডিসাইটিস রোগ হয়েছে। যদি অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যায় তাহলে বিভিন্ন রকমের সমস্যা হতে পারে তাই লক্ষণ গুলো প্রকাশ দেওয়ার সাথে সাথেই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এর ব্যবস্থা করা।

এপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ

আমরা ইতিমধ্যেই এই রোগের লক্ষণ এবং এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয়? সে সম্পর্কে জানা হয়েছে। এপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ গুলো নির্ণয় করে আমাদের খুব তাড়াতাড়ি এর চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে।

এপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণঃ

  • অ্যাপেন্ডিক্স এর সমস্যা হলে তলপিটের ডান দিকে ব্যথা শুরু হয়। প্রথমে নাভির চারপাশ থেকে ব্যথাটা ধীরে ধীরে তলপেটের দিকে প্রবাহিত হয়।
  • অনেক সময় দেখা যায় আমাদের তলপেট ফুলে ওঠে। তবে শুরুর দিকে ব্যথা কম থাকে। কিন্তু ধীরে ধীরে এই ব্যথা আরো বেশি বৃদ্ধি পায়।
  • এপেন্ডিসাইটিস হলে হজমে বিভিন্ন রকমের সমস্যা হওয়ার কারণে খেতে ইচ্ছা করে না।
  • অনেক সময় হালকা জ্বর আসতে পারে কিন্তু শরীরের তাপমাত্রা অনেক কম থাকে।
  • অনেক সময় কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া হতে পারে আবার কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
  • যদি আগে থেকেই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকে তাহলে এটি আরো বেড়ে যায়।

এপেন্ডিসাইটিস হলে করণীয়

যদি এপেন্ডিসাইটিস মারাত্মক আকার ধারণ করে তাহলে অবশ্যই ভালো কোন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এটিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। যদি প্রথম পর্যায়ে থাকে তাহলে এপেন্ডিসাইটিস হলে করণীয় গুলো জেনে এগুলো অবলম্বন করতে হবে।

এপেন্ডিসাইটিস হলে করণীয়ঃ

১। এপেন্ডিসাইটিস হলে সবথেকে বিশ্বস্ত এবং ঘরোয়া পদ্ধতি গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মুগ ডাল। মুগ ডাল প্রথমে পানিতে ভিজিয়ে সারা রাতে রেখে দিতে হবে এরপর সকালে সেই পানি এক চামচ পরিমাণ পান করতে হবে। এভাবে তিনবার সেবন করতে হবে।

২। এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কমানোর জন্য একটি ভেজা কাপড় পেটে জড়িয়ে রাখা যায়। সাধারণত ঠান্ডা পানি দিয়ে যদি কাপড় ভিজিয়ে সেটিকে পেটের উপরে রাখা হয় তাহলে আরো বেশি ভালো।

৩। এপেন্ডিসাইটিস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। অনেক সময় আমাদের শরীরে পানি না থাকার কারণে এপেন্ডিসাইটিস এর সমস্যা দেখা যায় তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

৪। এপেন্ডিসাইটিস ভালো করার জন্য রসুন অনেক কার্যকরী। রসুনের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো অ্যাপেন্ডিক্স এর ফোলা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে এছাড়া ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।

৫। গম এপেন্ডিসাইটিস এর জন্য কার্যকরী একটি ঘরোয়া পদ্ধতি। এছাড়া হজমের সমস্যা দূর করতে গম কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

৬। এক চামচ মেথি ঠান্ডা পানিতে মিশে এরপর পানি গুলো কয়েক মিনিট ফুটিয়ে নিন। তারপর মিশ্রণটি ঠান্ডা করে চায়ের মতো করে পান করুন। এই মিশ্রণটি অ্যাপেন্ডিক্স এর ভেতরে পুজ উৎপাদনে বাধা প্রদান করে।

আরো পড়ুনঃ প্রেসার লো হলে করণীয় ১৫ টি কাজ - প্রেসার লো এর ১৬ লক্ষণ

৭। এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কমাতে পুদিনা পাতার উপকারিতা রয়েছে। কয়েক ফোঁটা পুদিনা পাতার রস পানিতে মিশিয়ে তিন থেকে চার ঘন্টা পর পর পান করতে হবে। এতে করে এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথায় অনেকটাই কমে যাবে।

৮। এপেন্ডিসাইটিস ভালো করার ক্ষেত্রে লেবুর রস অনেক কার্যকরী এবং উপকারী। লেবুর রস ব্যাথা কমাতে এবং বদ হজম কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের সাহায্য করে থাকে। লেবুর রস বের করে এরপর সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে মিশ্রণটিকে খেতে হবে।

এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয়ঃ শেষ কথা

এপেন্ডিসাইটিস হলে করণীয়, এপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ, কিভাবে বুঝবেন আপনার এপেন্ডিসাইটিস হয়েছে? এপেন্ডিসাইটিস হলে বোঝার উপায়, এপেন্ডিসাইটিস কেন হয়? এপেন্ডিসাইটিস হওয়ার কারণ কি? এপেন্ডিসাইটিস কোন পাশে হয়? এপেন্ডিসাইটিস এর ব্যথা কোথায় হয়? এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।১৬৮৩০


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url